ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দেখা-শুনার জন্য নানির কাছে ছিল অনন্ত, প্রাণ হারালো লরি চাপায় 

দেখা-শুনার জন্য নানির কাছে ছিল অনন্ত, প্রাণ হারালো লরি চাপায় 

নেত্রকোণার বারহাট্টায় বালু বোঝাই লরি চাপায় অনন্ত নামের ৭ বছরের এক শিশুর ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে। উপজেলা সদরের গোপালপুর গরু-হাট এলাকায় শুক্রবার বিকেলে এই ঘটনা ঘটে।

নিহত অনন্ত সুনামগঞ্জ জেলার মধ্যনগর উপজেলার মাছিমপুর গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে। এই ঘটনায় শত শত মানুষ ছুটে এসে বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধ ও লরিটিতে অগ্নী সংযোগ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, অনন্তর বাবা-মা ঢাকায় গার্মেন্টে কাজ করেন। দেখা-শুনার জন্য তাকে বারহাট্টা উপজেলার গুমুরিয়া গ্রামে নানা ছাইকুল মিয়ার বাড়িতে রেখে যাওয়া হয়। ঘটনার সময় অনন্ত তার নানি রহিমা বেগমের হাত ধরে সড়কের পাশ দিয়ে হাঁটছিল। হঠাৎই নেত্রকোণার দিক থেকে একটি দ্রুতগামী লরি এসে অনন্তকে চাপা দেয়। এই পরিস্থিতিতে লরির চালক পালিয়ে বাজারের একটি ঘরে আত্নগোপন করেন। খবর ছড়িয়ে পড়লে অনন্তর নানা-নানিসহ শত শত নারী-পুরুষ এসে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। কিছু লোক লরিটিতে আগুণ ধরিয়ে দেয়। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুণ নিভায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একপর্যায়ে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটে। পরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মাইনুল হক, সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক কাজী সাখাওয়াত হোসেন এবং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের দীর্ঘসময়ের চেষ্ঠায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।

বিক্ষোদ্ধ জনতাদের মধ্য থেকে বলা হয়, লরি চাপা দিয়ে মানুষ মারলে বিচার হয় না। কিছুদিন গুমুরিয়া গ্রামের রফিক নামের এক অটোরিক্সা চালক লরি চাপায় মারা যায়, এর বিচার হয় নাই। আজ অনন্তকে মারলো, তার বিচার পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না। এ জন্যেই সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করা হচ্ছে। একজন বলেন, আমরা গরিব, কাজ করে খাই, এজন্যই বিচার পাওয়া যায় না। অনন্তর নানা ছাইফুল ও নূরেজা নামের এক মহিলা জানান, নাতিকে মেরে ফেলছে, আমরা বিচার চাইছি, এ জন্য পুলিশ আমাদেরকেই মেরেছে। এদিকে অনন্তর নানি রহিমা বেগমের আহাজারি থামছেই না। তিনি চিৎকার করে কাঁদছেন, আর বলছেন, দেখা-শুনার জন্য নাতিকে আমার কাছে রেখে গিয়েছিল, এখন তার বাবা-মাকে কী জবাব দেব। আমি এর বিচার চাই।

ওসি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, কিছু লোক বিক্ষোভের নামে উশৃঙ্খল আচরন, গাড়িতে অগ্নী সংযোগ, দোকানপাটে ভাঙচুর ও অবরোধ করে সড়কে চলাচলে বিঘ্ন ঘটায়। জনগণের সম্পদ রক্ষা ও পরিস্থিতি শান্ত করতে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছে পুলিশ। লরিসহ চালককে আটক করা হয়েছে।

নেত্রকোণা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত